অমিতাভ প্রহরাজ


অমিতাভ প্রহরাজের কবিতা


ইরোলিখা-এক


আতপ চালের গন্ধ কেমন ঝেঁপে জমে এসেছে কোথায়.. মুঠো মুঠো.. ভেজা ভোজালির মতো বড়ো জেগে আছে কেউ..

আমনপ্রতাপ নাম সে ধানের.. গানের মতো তার জল.. তার লবণ টলটলে... জিভকুচো করে রাখা আছে কোকিলঠোকরে..

অতঃপর চাপজংঘা থেকে ওষ্ঠ গলে পড়ে.. শোঁ শোঁ টান জানে ঝিলম খোলা কিরূপে ঘর্ষণ কলকল হয়ে যায়.. কিরূপে প্রণতি নেমে আসে দু উরু মঞ্জিলে.. ত্রিতাপপ্রকৃতি রয়েছে সেথা বড়ো কুঞ্চিত...

ধরো তার ইসাবেলা খুলে নিই..  ধরো তার মাথায় ক্যামেল রঙের গাছ, আদরে নামালাম.. ধরো এক গাঢ় বাদামী প্যাস্টেল তুমি ঠেকালে আলজিভে... রঙের গন্ধ পাও? পাও সেই মোম মোম খাতাদের ছবিগুলো গুঁড়ো গুঁড়ো স্টিল লাইফের পেঁপে বা আপেল থেকে কি সুমধুর নয়নচিনির গাছ তার ফল তার থেকে রঙ রস তার থেকে অবতীর্ণ কোনো আঁকাবাঁকা রেখা এক ফলকে এঁকেছে, এঁকেই চলেছে ফল গাঢ় ব্রাউন, ডিপ ব্রাউন প্যাস্টেল চোখ বোলানোর মতো জিভে ও জাহানে গন্ধ বোলায়...

নিঃশ্বাস ঝুমঝুমি হয়ে আসে... চাঁদ হয় চেরা চেরা.. একচির চাঁদ থেকে চাঁদচ্ছলাৎ এর ডিঙি জাগে.. যার বৈঠা আবক্ষ করা হলো... ভ্রুকুঞ্চণ হলো বুকে, বৃন্তে বর্বরতা হলো খুব আর..

মেষপালকের বাড়ি ভেঙে পড়ছে কোথাও তোমার.. তুমি তো মহল... মহলে কোথাও ভেঙে পড়ছে কাঁচা কাঁচা পাখিদের ঠোঁট.. গলে পড়ছে পেলিক্যান পাখি ফোঁটা ফোঁটা.. অথবা গ্রীক ভাস্কর্য যেন শ্বেতমর্মর আজ মাখমজলের মতো গেঁথে যাচ্ছে কোথাও.. তোমার মহলে কোথাও নয়ন গুঁড়ো গুঁড়ো, কোথাও কেঞ্জুকুড়া ধানের ক্ষেত বঁটি দিয়ে কুচি কুচি করে কাটা.. কোথাও নতুন তাঁতের মতো মুচড়ে নেওয়া জানলা... কোথাও কোনো তল নেই লালগোলাপের.. কোথাও লণ্ডভন্ড ডোলোমাইটের গায়ে সুবিশাল চকের খসখস আর ঘণস্বচ্ছ ঝর্ণার পাগলী ঝাঁকানো মাথার জল.. কোথাও গিলগামেশের মতো মোষ ফেনা তুলে শিং ঘষেই চলেছে উতলা ক্যানেলে... কোথাও আলজিভে একটুকরো ব্রাউন দাগ লেগে গেল... গালের ভেতরে প্যাস্টেল জমে উঠলো খুব আর.. আঁশীয় আলতো দুধলবণের ধূম... সমুদ্র ঢেউ খুলে ছুটে আসছে যেন... এমন নগ্নতার মুখে বুকে আমার আতপ চালের সঞ্চয় ফেটে পড়ে... ছমছম ছড়িয়ে পড়েছে চাল... একটা চাল হনহন করে গড়িয়ে চলেছে কোন সে কপালের দিকে, কে জানে..

ইরোলিখা/ ইমলি বিসমিল- ২


একটা লেখার রুরুম থেকে আমি খুব অঙ্গ অঙ্গ হলাম... হাঁটার হেম ছিলো খুব... এখন রাত্রি ত্রিপুরীমোহন... চাঁদবাক্স করে আমি উঠে এসেছি দ্বিগুণ মোহনায়...
চাঁদবাক্স করার কাজগুলি করতেন ইমলি বিসমিল নামে এক দেদার ঘুঙরুর লোক.. রোজ দেখি হাতে উজ্জ্বল নিয়ে হাঁটছেন বেগুনী নদীর ধারে... আমি তার স্যাক্সোফোনের আবছাগুলি বইতাম... তোমাকে বলি এই গল্প ওহে কাহন ববুলা... ইমলি বিসমিলের পা ছিলো বিবলিওগ্রাফিটির মতো খুঁতখুঁতে.. দেদার ঘুঙরুর লোক, আগেই বলেছি, ছায়া পড়লো ঝুমম, পা পড়লো ঝামমম... আর কান্তার কদমের মতো ফুলে ঝিংঝিং করে... স্যাক্সোফোনের ত্রিম, আবছা বলতে স্পেসিফিক্যালি যা আমি বইতাম... ত্রিম, খালি ত্রিম টুকু বয়ে নিতাম আমি আর ইমলি বিসমিল যা কিছু পিতল রয়েছে... আর সে কি হাঁটার হেম.. কখনো স্তনে গোড়ালি ডুবে যায়, কখনো নাভিতে বাতাস জড়িয়ে ঝ্যাং করে ওঠে চরাচর... কখনো হেঁটেছি উবুকূল প্রান্তরের মতো এক জিভের ঘুটঘুটে লাল বরাবর... সারাদেহ চাঁদ বাক্স করবার কাজ, ইমলি বিসমিল হঠাৎ উলুহু উলুহু বলে যে কাকে ডাকতেন, কাহন ববুলা জানে আর জানে তার ঝিরিঝিরে বেড়া খুলে কাদাজল ঘাঁটা এক পথে দুধেল বেভূল

ইরোলিখা/ ইমলি বিসমিল- ৩


প্লিজ প্লিজ বলো, মেলুহা পিস্তল তুমি মৃদু মৃদু চেটেছো কখনো? সে এক জগতের মোম ছিলো বটে তাতে.. আর ছিলো বুলেটের টুকটুকে টিপ.. খরগোশ ভাজাগুলো যেমন ছুটে যাচ্ছে গমের ওপর দিয়ে ঘোর কোনো কোরকের দিকে.. আর ইমলি বিসমিল ব্যাঞ্জো ছিঁড়ে ছিঁড়ে একটা চ্যাপ্টা জোৎস্নার মুখে ভরে দিচ্ছে যেন চাঁদে কতো গোগ্রাস চাষ হয়েছে সজোর অঝোরে.. পটহ লিখেছিলে তুমি ঠিক তৎক্ষণাৎ একটি পট্টবস্ত্র খুলে আমি দুধ কামড়ে দেখেছি রোমখোলা ঝুমঝুম করে... ফেনা খঞ্জর তুমি জানো? যা খুব ঘষে যায় আর রঙ জল্লাদের মতো গগনা হয়ে যায় এমনই বিরাট... ইমলি বিসমিল একটি গন্ধ ফোটালেন আর একই মাত্রায় একটি চেলো মাখিয়ে দিলেন কাহন ববুলার গায়ে.. আর আমার আদণ্ড ঋজুটি গজালো... গলগল করছে এক পেখমের মতো ধুম.. তার ত্রি.. তার প্রিম.. তার কিঙ্কিনী ক্রিং করে ওঠে.. ধীরে ধীরে কথাগুলো এমনই আমূল ধ্বন্যা হয়ে ওঠে... জল দিয়ে জঙ্গল রাঁধা হচ্ছে কোথাও... কোথাও ঠোঁটের ওপরে ফেননিভ টপ করে নেমেছে একা একা... সে এক ক্ষুদ্র কুমকুম.. লবণে ঘুঙুর হয়ে আছে... আঙুল উপড়ে নিয়ে ইমলি বিসমিল এক খইখই করে ডাকলেন আর তার উরুখোল খেয়া নেমে গেল.. আমিও বাড়ালাম উপুল ঝুপুল নামে দুই... মন্ত্র ভাসছে, লবণ আসছে, তিরিতিরি শুষুনা ভাসছে...আমি কি ভীষণ ক্লাচিং ক্লাচিং.. থাবায় তকলিফ উপড়ে আমি আরাম দুমড়ে গুঁজে দিই.. আঙুল হাপুস ডুবে যায় উগরে উগরে... তখন তখন দুধ বাদামের দ্রোণে ভেসে যাচ্ছে দু গালের ওম ও অবোলা...

1 টি মন্তব্য: